ই-কমার্স সিস্টেমের বেশ কয়েকটি ধরণ বা প্রকারভেদ রয়েছে। এখানে, আমরা সংক্ষেপে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব, যাতে আপনি বুঝতে পারেন যে, কোন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মটি আপনার প্রয়োজন। কারণ ভুল প্ল্যাটফর্ম সিলেক্ট করলে বা সঠিক টেকনোলজি সিলেক্ট করতে না পারলে আপনার সাইটের পারফরম্যান্স খারাপ হতে পারে। যেমন সাইট স্লো হয়ে যেতে পারে, যখন তখন সাইট ডাউন হতে পারে, সাইট হ্যাক হতে পারে, ইত্যাদি নানারকম সমস্যা হতে পারে, এসব কারণে আপনার কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স খারাপ হলে এই ওয়েবসাইটের কারণে আপনি প্রচুর ব্যবসা হারাবেন অর্থাৎ ভুল টেকনোলজি সিলেকশনের কারণে আপনার বিজনেস অনেকাংশেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই বিষয়টি ভালোভাবে বুঝে নেয়া অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসুন ই-কমার্সের প্রকারগুলি একবার দেখে নেওয়া যাক।
eCommerce Store
eCommerce Marketplace
Classified eCommerce
Hybrid eCommerce
ই-কমার্স স্টোর হচ্ছে একটি ভার্চুয়াল দোকান যেখানে দোকানের মালিক তার কাস্টমারের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রোডাক্ট দোকানে রাখেন এবং কাস্টমার সরাসরি দোকান থেকে প্রোডাক্ট ক্রয় করেন। অর্থাৎ এখানে ক্রেতা এবং বিক্রেতার মধ্যে সরাসরি লেনদেন হচ্ছে। এটাকে বি টু সি মডেল বলা হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ- চালডাল ডট কম, অথবা ডট কম ইত্যাদি। আপনি যদি সরাসরি প্রোডাক্ট বা কোন সার্ভিস বিক্রি করতে চান তাহলে আপনার জন্য ই-কমার্স স্টোর হচ্ছে সঠিক চয়েস।
ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস হচ্ছে একটি ভার্চুয়াল বাজার এখানে প্রচুর দোকান বা বিক্রেতা থাকবে। ক্রেতারা যে কোন দোকান বা বিক্রেতার থেকে পণ্য কিনতে পারবে। এখানে বাজার কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক বিক্রেতার কাছ থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন নেবেন। তারা সরাসরি কোন প্রোডাক্ট বিক্রি করেন না। অর্থাৎ কমার্স স্টোর হচ্ছে একটি দোকান এবং কমার্স মার্কেটপ্লেস হচ্ছে একটি বাজারের সাথে তুলনীয়। এটাকে বি টু বি মডেল বলা হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ- দারাজ হচ্ছে একটি বাজার এবং সেলারগণ হচ্ছে একটি দোকানী।
ক্লাসিফাইড ই-কমার্স হচ্ছে একটি ভার্চুয়াল ওয়াল বা দেয়াল বা অনলাইন পোর্টাল যেখানে যে কেউ নতুন বা পুরাতন পণ্য বিক্রি করতে পারেন বা বিক্রির উদ্দেশ্যে তালিকাভুক্ত করতে পারেন। অন্যদিকে ক্রেতা সেই পণ্যটি কেনার জন্য বিক্রেতার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে পণ্যটি কিনতে পারেন। এক্ষেত্রে ই-কমার্স কর্তৃপক্ষ কোন দায়দায়িত্ব গ্রহণ করেন না। উদাহরণস্বরূপ- বিক্রয় ডট কম
হাইব্রিড ই-কমার্স এটি হচ্ছে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সলিউশন যেখানে একটা প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টিং, ইনভেন্টরি, এইচআর, পেরোল, সেলস, পারচেজ, সিআরএমসহ সব ধরনের কর্মকান্ড একটি সফটওয়্যার থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং ই-কমার্স হচ্ছে এর ফ্রন্ট এন্ড পার্ট। কিন্তু এর ব্যাক এন্ডে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থাপনা থাকে। অর্থাৎ ইআরপি ইন্টিগ্রেটেড সল্যুশন। এটাকে হাইব্রিড ই-কমার্স বলা যেতে পারে।
ই-কমার্স তৈরিতে মার্কেটে অনেক রকমের সল্যুশন রয়েছে। যেমন-
ওয়ার্ডপ্রেস
ওপেনকার্ট
লারাভেল
মার্নস্ট্যাক
আরো অনেক রকমের ই কমার্স প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। আপনি যে ধরনের ই-কমার্স সাইটই তৈরি করেননা কেন আপনাকে টেকনোলজি সিলেকশন টা অত্যন্ত সতর্কভাবে এবং সাবধানতার সহিত করতে হবে। অন্যথায় আপনার ব্যবসা মাঝপথে মুখথুবড়ে পড়তে পারে ফলে আপনি হতাশ হয়ে যাবেন এমনকি ব্যবসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস। এটা ফ্রীতে পাওয়া যায়। কিন্তু এর সমস্যা রয়েছে অনেক। যারা এটি ব্যবহার করে তাদের যুক্তি হচ্ছে এটি অপারেট করা সহজ এবং এটিতে কোনো টাকা খরচ হচ্ছেনা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এটাতে সবচেয়ে বেশি টাকা খরচ হয়, কারণ প্রফেশনাল ওয়েবসাইট বানাতে গেলে নানারকম প্লাগিন ও থিম কিনতে হয়, এছাড়াও এর হোস্টিং সার্ভার খরচও অনেক বেশি। এছাড়াও একটু ভিজিটর বেশি হলেই ওয়েবসাইট স্লো অথবা ডাউন হয়ে যায়। নিয়মিত আপডেট রাখতে হয়। এটা যখন তখন হ্যাক হওয়ার ঝুঁকি থাকে এবং অপ্রয়োজনীয় অনেক ফিচার থাকে, যা একটি প্যাড়াদায়ক ব্যাপার। এটা এমন যে, একটি কাজ করার জন্য আপনার একজন লেবার প্রয়োজন, এখন একজন লেবার একদিন কাজ করার জন্য এক হাজার টাকা পারিশ্রমিক চাচ্ছে এবং অন্য একজন লেবার বল্লো সার আমাকে কোনো টাকা দিতে হবে না, শুধু আমার ছয়টা বাচ্চাসহ আমার পরিবারকে আপনি একটু থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন। এখন আপনি যদি ফ্রিতে পেয়ে ওই লেবারকে কাজে নিয়ে আসেন তাহলে ছয়টা বাচ্চা এবং তার পরিবারকে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করতে আপনার ওই একদিনের লেবার খরচের চেয়ে আরো অনেক বেশি টাকা খরচ হবে এবং এদেরকে ম্যানেজ করতে আরো অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে। আপনার ই-কমার্স এর ক্ষেত্রে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করা ঠিক এইরকমই। ফ্রীতে পেলেও খরচ অনেক বেশি আরো অনেক ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়।
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ৫০০০ টাকা থেকে ২০,০০০ টাকার মধ্যে ই-কমার্স স্টোর তৈরি করা যায়।
আপনার যদি লং টার্মের ব্যবসার কোন পরিকল্পনা থাকে, অথবা ব্যবসাকে অনেক বড় করার পরিকল্পনা থাকে, তাহলে ওয়ার্ডপ্রেস আপনার জন্য নয়।
এটাও ওয়ার্ডপ্রেস এর মত ফ্রি ই-কমার্স সলিউশন। তবে এটা ওয়ার্ডপ্রেস এর চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি ফাস্ট এবং এর সার্ভার খরচও কম। তবে এটি ফ্রি হলেও এটার জন্য বিভিন্ন প্রফেশনাল এক্সটেনশন এবং থিম কিনতে হয়। এটাতেও হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি রয়েছে।
ওপেনকার্ট দিয়ে ১০,০০০ টাকা থেকে ৩০,০০০ টাকার মধ্যে ই-কমার্স স্টোর তৈরি করা যায়।
লারাভেল হচ্ছে বর্তমান সময় অত্যন্ত সিডিউর একটি ফ্রেমওয়ার্ক। লারাভেল দিয়ে ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে পারেন অথবা কিনতে পাওয়া যায়। এর পারফরমেন্স যথেষ্ট ভালো তবে সুপার ফাস্ট না। আপনার যদি মিডিয়াম টাইপের বিজনেস পরিকল্পনা থাকে যেমন খুব বেশি বড়ো হবেনা আবার একদম ছোটওনা। অর্থাৎ মাঝারি সাইজের বিজনেস প্ল্যান করে থাকেন সেক্ষেত্রে লারাভেল আপনার জন্য পারফেক্ট চয়েস।
লারাভেল দিয়ে ১০,০০০ টাকা থেকে ৫০,০০০ টাকার মধ্যে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা যায়।
মার্নস্ট্যাক হচ্ছে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে লেটেস্ট এবং বেস্ট পারফরম্যান্সের জন্য একটি সেরা চয়েজ। এটা সুপারফাস্ট স্পিড দেয়। এটাকে রান টাইম এনভায়রনমেন্ট বলা হয়। এটা মঙ্গো ডিবি, এক্সপ্রেস, রিয়াক্ট, নোড জেএস এর সমন্বয়ে তৈরি করা হয়। আপনার যদি বড় বিজনেস পরিকল্পনা থাকে আর বাজেট ভালো থাকে সেই ক্ষেত্রে মার্নস্ট্যাক ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে পারেন। এটাকে আপনি ফিউচার টেকনোলজি বলতে পারেন।
মার্নস্ট্যাক দিয়ে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হলে মিনিমাম ১,০০,০০০ টাকা থেকে শুরু করতে হবে।
To help you make an informed decision, we've compiled a list of our most frequently asked questions relating to the products and services listed on this page.
If you can't find the answer to your question or if you would like more information about it, please feel free to contact us at any time and we'll be happy to help you.